স্বদেশ ডেস্ক:
‘ইতিহাসে এটা অন্যতম বড় এয়ারলিফ্ট। আমেরিকা ছাড়া বিশ্বের অন্য প্রান্তে এত বড় মাপে কেউ উদ্ধার কাজ চালাতে পারত না।’ আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রবল বিতর্কের মধ্যেই মার্কিন ‘আত্মসম্মানে’র আঁচ শোনা গেল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গলায়। আর মারাত্মক চাপের মধ্যেই কোনো অনুশোচনা দেখা যায়নি তার মুখে। শুক্রবার আফগানিস্তান থেকে মার্কিনিদের উদ্ধার করা নিয়ে অগ্রগতির বিষয়ে বলতে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন জো বাইডেন। সেখানেই তিনি দাবি করেন যে তালেবানের সাথে আমেরিকার ‘চুক্তি’ হয়েছে। এবং মার্কিন পাসপোর্টধারী কাউকেই বিমানবন্দরে আসা থেকে আটকানো হবে না তালেবানের পক্ষ থেকে।
এত কিছুর মধ্যেও আফগানিস্তানে থাকা মার্কিনিদের সুরক্ষার বিষয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা শোনা গেল না বাইডেনের গলায়। এদিন বাইডেন বলেন, ‘এই অভিযানে শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা নিশ্চিতভাবে আমি বলতে পারব না। এই অভিযানে যে প্রাণহানি হবে না বা এতে কোনো ঝুঁকি থাকবে না, তাও নিশ্চিত করতে পারব না আমি। তবে সর্বোচ্চ সেনাপতি হিসেবে আমি এটা বলতে পারি যে আমার ক্ষমতায় থাকা সব করব আমি।’
বাইডেন এদিন আরো বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে একটি বিষয় জানাতে চাই, কোনো আমেরিকান যদি দেশে ফিরতে চায়, তাদের আমরা দেশে ফেরাব।’ যদিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে আফগানিস্তানে বর্তমানে কতজন মার্কিন রয়েছেন, এই বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণাই নেই মার্কিন প্রশাসনের। তা সত্ত্বেও বাইডেন এদিন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা এটা করতে পারব।’
এদিকে এদিন কাবুল বিমানবন্দরের সামনের অরাজকতার ছবি দেখা গেলেও সেই বিষয়ে কিছুটা উদাসীন ছিলেন বাইডেন। তাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাইডেন ইঙ্গিতে বোঝান, বিমানবন্দরের ভিতরে মার্কিন সেনা সব সুরক্ষিত রেখেছে। এবং মার্কিনিদের দায়িত্ব যেন বিমাবন্দরের পরিসরে সীমাবদ্ধ। এদিন এক সাংবাদিক বাইডেনকে প্রশ্ন করেন, কোনো মার্কিন যদি বিমানবন্দরে পৌঁছতে না পারেন, সেক্ষেত্রে কি মার্কিন সেনা বা কেউ তাকে বিমানবন্দরে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে? এই প্রশ্নের অবশ্য কোনো স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি বাইডেন। তার কথায়, তালিবান মার্কিন পাসপোর্টধারীদের আটকাচ্ছে না। যদিও আসল চিত্রটা অন্য বলে কারো কারো দাবি। তাদের মতে, অনেকেই বিমানবন্দরের বাইরে পৌঁছেও বিমানবন্দরে ঢুকতে পারছেন না। গেট দিয়ে না ঢুকে দেয়াল ডিঙিয়ে ঢুকতে হয়েছে অনেককেই।
এদিকে আফগানিস্তান থেকে এভাবে সেনা প্রত্যাহার করে দেশটা তালেবানের হাতে তুলে দেয়া নিয়ে একটি অংশের মধ্যে বিতর্ক এবং চাপের মুখেও বাইডেনের গলায় অনুশোচনার বিন্দুমাত্র সুর শোনা যায়নি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস